আপেল খাওয়ার উপকারিতা:
ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে যা প্রাচীন কাল থেকে প্রচলিত–“নিয়মিত আপেল খেলে চিকিৎসকের প্রয়োজন হয় না“
আপেল একটি সুপরিচিত ফল-যা সব যায়গায় পাওয়া যায়। তাই আপেল খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে আজ কথা বলব। এটি রোগ প্রতিরোধক ও পুষ্টিকর একটি ফল যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। আপেলে আছে শর্করা, ভিটামিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, খনিজ লবণ, আঁশ, পেকটিন ও ম্যালিক এসিড। আবার এর মধ্যে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিএন্টস-যা কিনা হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। শর্করা রয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ভিটামিনের মধ্যে আছে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি এবং এগুলোর উপস্থিতি আপেলের খোসা ও খোসার সাথে লাগানো মাংসল অংশেই বেশি। আপেলের খোসায় মাংসল অংশের চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি ভিটামিন-এ আছে। এছাড়া খনিজ লবণের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম, ফসফরাস ও লৌহ। আপেল এ সোডিয়ামের পরিমাণ খুবই সামান্য রয়েছে। আপেল এর দাম একটু বেশি হলেও আপেল স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারি।

আপেল এর পুষ্টি গুনাগুন নিয়ে এখন আলোচনা করা হল:
১. স্বাস্থ্যকর দাঁত
আপেল আপনার মুখের ভিতরের ব্যাকটেরিয়ার মাত্রাকে কমিয়ে দেয়, যা আপনার দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
২. ক্যান্সার প্রতিরোধক
বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় বের করেছে যে অ্যাপেল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তা প্রায় ২৩ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনে। আপেলের খোসার মধ্যে এমন একটি পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা আপনার লিভার, কোলন এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুকি কমিয়ে আনে।
৩. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে
যাদের ডায়াবেটিস আছে, বিশেষ করে টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর সম্ভাবনা ২৮ শতাংশ কমে যায় অ্যাপেল খাওয়ার কারনে।
৪. কলেস্টেরল কমানো
আপেল এ দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে যা অন্ত্রের ফ্যাটের সাথে আবদ্ধ, যা কলেস্টেরলের মাত্রা তুলনামুলক ভাবে কমিয়ে আনে।
৫. স্বাস্থ্যকর হার্ট এর জন্য
একটি গবেষণায় দেখা গেছে কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনতে সক্ষম আপেল। তাই এটি হার্ট এর জন্য খুবই উপকারি।

৬. গলস্টোন প্রতিরোধ করে
আমাদের শরীররে বিভিন্ন কারনে ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয় যার ফলে আমাদের গল ব্লাডারে স্টোন এর সৃষ্টি হয়। কিন্তু আপেল খাওয়ার মাধ্যমে গল ব্লাডারে স্টোন হওয়ার ঝুকি অনেকটাই কমে যায়।
৭. ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য
আপেলে পেকটিন নামের একটি উপাদান আছে যা ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরধে সাহায্য করে।
৮. ওজন নিয়ন্ত্রণ
আপেল অনেক ভিটামিন সমৃদ্ধ। অ্যাপেল খেলে খাদ্যের চাহিদার সাথে ভিটামিনের ঘাটটিও পূরণ হয়। প্রতিদিন আপেল খেলে খুব সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
৯. ছানি প্রতিরোধ করে
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে আপেল এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস-এর উপাদান রয়েছে যা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ছানি করা কমায়।
১০. সুস্থ ত্বক
আপেল এ রয়েছে ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-সি যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ত্বক মসৃণ রাখতে আপেলের গুনাবলি বলে শেষ করা যাবে না। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে প্রতিদিন আপেল খেলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়।

১১. হজম ক্ষমতা বাড়ায়
শর্করা শক্তির উৎস হল আপেল। এই শর্করা খাদ্যনালীতে ধীরে-ধীরে ভেঙ্গে হজম হয় বলে শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল থাকে। প্রতিদিন আপেল খেলে হজমের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরী হয় পেটের মধ্যে যা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
১২. বাতের ব্যথা দূর করে
আপেল এ রয়েছে ম্যালিক এসিড যা শরীরের ইউরিক এসিডকে নিষ্ক্রিয় করে বাতের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। তাই আপেল বাতের ব্যথায় উপকারী।
১৩. রক্তচাপ কমায়
আপেল এ রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও আঁশ যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

১৪. হাড় শক্ত করে
আপেল এ আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে বোরন যা হাড়কে শক্ত রাখতে সাহায্য করে।
১৫. ক্ষুধা নিয়ন্ত্রন করে
আপেল এ প্রচুর পরিমাণে ক্যলরি থাকে। জৈব এসিড উপাদান সাধারনত আমাদের ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রন করে। আপেল এ এই উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকে। তাই যদি আপনার বার বার ক্ষুধা লাগে, তাহলে আপেল খেয়ে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন ।
আপেলের স্বাস্থ্য গুনাগুণ সম্পর্কে আরও জানতে ভিসিট করুন
কি করলে আমারা আমাদের পোস্ট আরও ভাল করতে পারি এই বিষয়ে অবশ্যই মতামত প্রকাশ করবেন।
আরও কি টাইপের পোস্ট বা ক্যটাগরি আমরা যুক্ত করতে পারি এই বিষয়ে যদি মতামত থাকে তাও ব্যাক্ত করার অনুরোধ রইল।
ধন্যবাদ।